শীতে ব্যথা-বেদনা কমাতে করণীয়
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০২:৫৯,অপরাহ্ন ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ৪৩১ বার পঠিত
তৃতীয় বাঙলা ডেস্কঃ
আস্তে আস্তে শীত বেশি পড়তে শুরু করেছে। শীতের তীব্রতায় বাত-ব্যথায় আক্রান্ত রোগীদের কষ্ট বাড়ে। তবে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তন করলে, স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে চিকিৎসা নিলে বা কিছু নিয়ম মেনে চললে ভালো থাকা যায়।
সাধারণত ঘাড়, কোমর, শোল্ডার জয়েন্ট, হাঁটু ব্যথার রোগীর সংখ্যাই বেশি। এই ধরনের ব্যথার ৯০ শতাংশ হচ্ছে ‘মেকানিক্যাল সমস্যা’। মেকানিক্যাল সমস্যা বলতে মেরুদণ্ডের মাংসপেশি, লিগামেন্ট মচকানো বা আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক সমস্যা, কশেরুকার অবস্থানের পরিবর্তনকে বুঝায়। অন্যান্য কারণের মধ্যে বয়সজনিত হাড় ও জোড়ার ক্ষয় বা বৃদ্ধি, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, গাউট বা গেঁটেবাত, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, এনকাইলজিং স্পন্ডাইলাইটিস, বার্সাইটিস, টেন্ডিনাইটিস, স্নায়ুবিক রোগ, টিউমার, ক্যান্সার, মাংসপেশির রোগ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। শীতে এসব সমস্যায় ব্যথা আরো তীব্র হয় এবং রোগী ক্রমান্বয়ে অসুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে।
মেনে চলুন কিছু নিয়ম
► ব্যথা বেশি হলে ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিন।
► ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। তবে ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ রাখুন।
► ব্যথার জায়গায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট গরম বা ঠাণ্ডা শেক দিন।
► বিছানায় শোয়া ও ওঠার সময় যেকোনো একদিকে কাত হয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে শোয়া ও ওঠার অভ্যাস করুন।
► নিচু জিনিস যেমন—পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে পিঠ সাপোর্ট দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন।
► দাঁড়িয়ে বা চেয়ারে বসে রান্না করুন।
► শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
► সিঁড়িতে ওঠার সময় ধীরে ধীরে হাতল ধরে উঠুন।
► ঝরণায় বা চেয়ারে বসে গোসল করুন।
► শোবার সময় মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করুন।
► বাইরে চলাফেরা করার সময় কোমরের বেল্ট ব্যবহার করুন। শোবার সময় ও ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই বেল্ট খুলে রাখবেন।
► ব্যথা তীব্র হলে উঁচু কমোডে বসে টয়লেট করুন।
► চলাফেরায় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন ও রাস্তা এড়িয়ে চলুন এবং সামনের বা মাঝামাঝি আসনে বসুন। ব্যথা কমে গেলে নিয়মিত সমতল জায়গায় কমপক্ষে ঘণ্টাখানেক হাঁটুন।
যা করবেন না
► ঘাড় নিচু করে কোনো কাজ করবেন না।
► কোনো ধরনের মালিশ করবেন না।
► দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। এক ঘণ্টা পর পর অবস্থান বদলান।
► হাই হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না।
► ফোমের বিছানায় শোবেন না; শক্ত ও সমান বিছানায় শোবার অভ্যাস করুন।
► ভারী ওজনের বোঝা বহন করবেন না।
► পেট ভরে খাবেন না; প্রয়োজনে অল্প অল্প করে বারবার খান।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. এম ইয়াছিন আলী
ফিজিওথেরাপি বিভাগের প্রধান
প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমণ্ডি, ঢাকা।