খাবার হজম না হওয়া ও প্রতিকার
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩৩:১৩,অপরাহ্ন ১৩ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৬২৯ বার পঠিত
— ডাঃ ফারহানা মোবিন
বিভিন্ন কারণে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। তখন অস্বস্তি থেকে নানান রকম সমস্যা হয়। আবার অনেক লুকায়িত অসুখ রয়েছে, যার জন্য সঠিকভাবে খাবার হজম হয়না।
কারণগুলি হলো ঃ-
১। খাবার সময় খুব দ্রুত খাওয়া। সঠিকভাবে চিবানোর অভাব, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদ, নিয়মিত রাত জেগে ডিউটি করা, সঠিক সময়ে খাওয়ার অভাব, খাবারে অতিরিক্ত তেল মশলা খাওয়া, তৈলাক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বেশী খেলে এই ধরনের সমস্যা হয়।
২। পাকস্থলীর কোন অসুখ, খাদ্যনালীর কোন গঠনগত ত্রুটি, মাত্রাতিরিক্ত এ্যাসিডিটির সমস্যা, অতিরিক্ত কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, দীর্ঘ সময় যাবৎ না খেয়ে থাকার পরে এক সাথে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, হঠাৎ করে খুব বেশী পরিমাণে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা, অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া, গভীর রাতে বা খুব ভোরে একসাথে অনেক বেশী খাওয়া হলো খাবার সঠিকভাবে হজম না হওয়ার অন্যতম কারণ।
৩। প্যানক্রিয়াস (pancreas ) নামের এক ধরনে অঙ্গ রয়েছে, যাতে ইনফেকশন হলে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। রক্তে চিনির মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হজম শক্তি দূর্বল হয়ে যায়।
৪। বিভিন্ন রকম ওষুধ খেলেও হজম শক্তি কমে। বিশেষত যারা বয়স্ক বা নানান রকম অসুখে আক্রান্ত, হাটাচলা ঠিকভাবে করতে পারেন না, মানসিক রোগ বা কেমোথেরাপীর ওষুধ খান, এই সমস্যাগুলোও হজম শক্তি দূর্বল হবার জন্য দায়ী।
৫। মাদকদ্রব্য, ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি, পান, সুপারী, গুল, জর্দা প্রভৃতি হজম শক্তি দুর্বল করে।
৬। দেহের কোথাও ক্যান্সার, খাদ্যনালী থেকে পাকস্থলী পর্যন্ত কোন গঠনগত ত্রুটি, খাবার হজমের সাথে সম্পৃক্ত কোন অঙ্গ বা নালীতে ইনফেকশন বা কোন অসুখ, দীর্ঘ বছর ধরে খাবারে প্রচন্ড অনিয়ম, হঠাৎ করে ওজন বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ, কৃমির আক্রমণ, দীর্ঘ বছর যাবৎ বদহজমের সমস্যা, পানি খুব অল্প পরিমাণে খাবার অভ্যাস (২৪ ঘন্টাতে ৩-৪ গ্লাস), খাবারে প্রচন্ড পরিমাণে অনিয়ম।
৭। গলব্লাডারে পাথর, কিডনীতে পাথর, খাদ্য নালীর অপারেশনের পরে হজমে সমস্যা হতে পারে।
হজমের সমস্যা প্রতিকারের জন্য আমাদের করণীয় ঃ
১। নিয়মিত দুই লিটার পানি পান করুন। তবে কিডনীর সমস্যাতে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শে পানি পান করুন।
২। অতিরিক্ত তেল, মশলা, চর্বি জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, পরিহার করুন। একবারে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
৩। মনথেকে ঝেড়ে ফেলুন হতাশা, কষ্ট, খাবার সময় মনোযোগ দিয়ে খান। হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ ঠিক নয়। ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ কমান। আবার একবারে খুব বেশী খাওয়া ঠিক নয়।
৪। অতিরিক্ত রাত জেগে কাজ করাটা পরিহার করুন। যতোটা সম্ভব সঠিক সময়ে খাবার খান। বছরে অন্তত একবার পুরো শরীরের চেক আপ করান। এতে লুকায়িত সমস্যা থাকলে ধরা পড়বে।
৫। সব ধরনের মাদকদ্রব্য পরিহার করুন। ধুমপান থেকে বিরত থাকুন এবং খাবার সাথে সাথে ঘুমাবেন না।
৬। নিয়মিত হাটুন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৭। কোন ওষুধ খাবার পরে হজমে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৮) সব সময় হাসি খুশী থাকতে হবে।
হতাশা মানুষের খাবার হজমে সমস্যা তৈরী করে।