কোন পথে ব্রেক্সিট
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০৯:২২,অপরাহ্ন ২২ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ৭৮৭ বার পঠিত
মেহেদী হাসান
২০১২ সালে ব্রিটিশ ইনফ্লুয়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা পিটার ওয়েলডিং ‘ব্রিটেন’ আর ‘এক্সিট’ মিলে প্রথম ব্রেক্সিট শব্দটি ব্যবহার করে একটি টুইট করেন। তারপর থেকে শুধু ব্রিটেন আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নয়, পৃথিবীব্যাপী বহুল আলোচিত বিষয় ব্রেক্সিট, যত সময় যাচ্ছে ততই ব্রেক্সিট হয়ে উঠছে দুর্বোধ্য। প্রতিনিয়ত জন্ম হচ্ছে অসংখ্য প্রশ্নের। ভৌগোলিকভাবে ব্রিটেন হল একটা দ্বীপপুঞ্জ। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ওয়েলস নিয়েই বর্তমান যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের নেতৃত্বে ১৯৭৩ সালে ব্রিটেন ইইউতে যোগ দেয়। তখন এটির নাম ছিল ইইসি (ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কম্যুনিটি)। পৃথিবীতে ভৌগোলিকভাবে একই এলাকায় অবস্থিত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে বিভিন্ন আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক জোটবদ্ধ হয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে আসছে। সফল আঞ্চলিক-অর্থনৈতিক জোটের তালিকায় প্রথমেই আসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাম। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ২৮টি দেশ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে জোটবদ্ধ হয়ে আছে। এ জোটের সদস্য দেশগুলোর উন্মুক্ত সীমান্তব্যবস্থা, শিক্ষা সুবিধা, সবচেয়ে বড় একীভূত বাজার ব্যবস্থা ও ইইউ নাগরিকত্বের প্রচলন করে জোটটি অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। এ ছাড়া মানবাধিকার রক্ষায়ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস, প্রযুক্তি সহায়ক ও পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়তেও ইইউ গ্রহণযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
বৃহত্তর মানবকল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় চেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ ইইউকে ২০১২ সালে ভূষিত করা হয় শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে। ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পর ব্রিটেন আর এ জোটে থাকতে চায় না। ঐতিহাসিকভাবেই ব্রিটিশরা ইউরোপের অন্য দেশগুলোর থেকে বিচ্ছিন্ন, এ বিচ্ছিন্ন জাতিসত্তা তাদের সবসময় আলাদা করে রেখেছে। ইতিহাসবিদ ভারনন বগদানোর বলেন, ‘ভৌগোলিক কারণেই শক্তিশালী নৌবহরকেন্দ্রিক ব্রিটিশরা বিচ্ছিন্ন জাতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো সেসব বিষয় অনেকটা বদলেছে। তবে ব্রিটিশদের মনে কিছু প্রভাব, তবু রয়ে গেছে’। ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সমঝোতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষমতার বিষয়ে ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা রয়ে গেছে। তারা আদেশ দিয়ে অভ্যস্ত, আদেশ নিয়ে নয়’। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদর্শের সঙ্গে ব্রিটিশদের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব ছিল আগে থেকেই। এই বিষয়ে ডয়চে ভেলের ডাহং জাংয়ের মতামত অনুযায়ী, ইউরোপীয় রাজনীতি হল নির্ভরশীলতার রাজনীতি। যদি ভুলপথে যায়, তবে কোনো সমস্যা নেই। চোখ বন্ধ করে চলতে থাকো। দীর্ঘ সময় লাগবে, তবে তুমি তোমার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল পন্থা হল, ‘যার কোনো বিকল্প নেই।’ যেটা হবে না, সেটা কখনও হওয়ার নয়। ব্রিটিশরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ পথে চলতে বিশ্বাসী ছিল না। তাদের যুক্তিকে ব্রিটিশরা মোটেও সন্তুষ্ট হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২০১৫ সালে তার দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনী ইশতেহারে ব্রেক্সিট প্রশ্নে গণভোট ডাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৩ জুন ব্রেক্সিট প্রস্তাবে গণভোটের আয়োজন করেন। সেখানে ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যুক্তরাজ্যের কি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে থাকা উচিত, নাকি উচিত না? ওই গণভোটে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে, আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ। ডেভিড ক্যামেরন ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ছিলেন, নিজের অবস্থানের পক্ষে গণভোটের রায় না আসায় পদত্যাগ করেন ক্যামেরন এবং প্রধানমন্ত্রী পদে ক্যামেরনের স্থলাভিষিক্ত হন তেরেসা মে। দায়িত্ব নিয়েই তেরেসা বলেছিলেন, নির্দিষ্ট দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাবে ব্রিটেন। কিন্তু আসলে তা ঘটেনি। ইইউর সঙ্গে আলোচনার পর তৈরি হওয়া ব্রেক্সিট চুক্তি সংসদে পাস করাতে ব্যর্থ হন তিনি। পরপর তিনবার চুক্তিটি সংসদে তুলেও সাংসদদের সমর্থন পাননি। এমনকি চুক্তি পাস হলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েও সফল হতে পারেননি তেরেসা মে। নিজ দলের সাংসদসহ মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যও মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি মেনে নিতে পারেননি। ফলে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনসহ ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত কেবিনেট থেকে পদত্যাগ করেছেন অন্তত ২২ মন্ত্রী। এ অবস্থায়, শুরুতে বিরোধী লেবার পার্টির সঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত তাদের কাছেও যান মে। কিন্তু সেই আলোচনাও সফল হয়নি। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। পরে তা বাড়িয়ে প্রথমে ১২ এপ্রিল এবং পরে ৩১ অক্টোবর করা হয়েছে। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় ইইউ। তবে জুনে এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একের পর এক চেষ্টা ভেস্তে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ২৪ মে দলের প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তেরেসা মে।
ব্রেক্সিট-বিতর্ক সামলাতে গিয়ে তিন বছরে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী বদল হল ব্রিটেনে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নতুন হলেই কি ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো পরিবর্তন আসবে? সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেক্সিট বিশ্লেষক সাইমন আশারউড বলছেন, ‘না, আসলে তা হবে না। কারণ মূল বিষয়গুলোয় একই থাকবে’। ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলছেন, ‘মিসেস মে’কে সরিয়ে দেয়াটা ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা ভাঙতে পারবে না’। কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে এক গভীর বিভেদ তৈরি হয়েছে এবং কীভাবে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে পারে, তা নিয়ে রাজনীতিবিদরা কিছুতেই একমত হতে পারছেন না। তাই তেরেসা মে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিলেও যুক্তরাজ্যে যে সংকট তৈরি হয়েছে তার মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে না। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মে-র উত্তরসূরি হিসেবে এগিয়ে আছে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। ১৩ জুন অনুষ্ঠিত দলীয় আইনপ্রণেতাদের প্রথম দফা ভোটে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনসন ১১৪ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে বড় ব্যবধানে প্রতিপক্ষদের থেকে এগিয়ে আছেন। যে-ই ক্ষমতায় আসুন না কেন, ‘ব্রেক্সিট-বোঝা’ কাঁধে তুলে নিতে হবে তাকেই। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বরিস জনসন বলেছেন, ‘চুক্তি হোক বা না হোক, ৩১ অক্টোবর ইইউ থেকে বেরোচ্ছেই ব্রিটেন। কোনো চুক্তিতে না-গেলেই ভালো চুক্তি আদায় করে নেয়া যাবে। কাজ করিয়ে নিতে হলে অবজ্ঞাই শ্রেষ্ঠ উপায়।’ কিন্তু নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্যও ব্রেক্সিট এত সহজ হবে না। সবচেয়ে বড় যে প্রশ্ন, ব্রেক্সিট পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত স্কটল্যান্ড কিংবা উত্তর আয়ারল্যান্ড কি ইংল্যান্ডের সঙ্গে থাকবে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে। ২০১৬ সালের গণভোটে স্কটল্যান্ডে শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছে ইইউতে থাকার পক্ষেই। উত্তর আয়ারল্যান্ডের ক্ষেত্রেও সমীকরণটি একই রকম। তাই গণভোটে ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের ভোটের ফলাফলে পার্থক্য রয়েছে। তা ছাড়া ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটে ৪৫ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছিল স্বাধীনতার পক্ষে, বাকি ৫৫ ভাগ ভোট দিয়েছিল ব্রিটেনের পক্ষে থাকার জন্য। ফলে সেবার স্কটল্যান্ড স্বাধীন হয়নি। স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার ও স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির প্রধান নিকোলা স্টুরগিওন বলেছেন, তিনি আবার স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট চান এবং ইংল্যান্ড থেকে বেরিয়ে গিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চান এবং ইইউতে যোগ দিতে চান।
একইভাবে আয়ারল্যান্ডে সিন ফেইনও স্বাধীনতার ডাক দিয়েছে। তা ছাড়া ব্রিটেন যদি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে তো ব্রিটেন অন্য দেশ হয়ে গেল। ফ্রি মুভমেন্ট অব পিপল্- যা ইইউএর মূল নীতির অন্যতম স্তম্ভ- তা আর তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না এবং সে ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ইইউর মধ্যে সীমান্ত ফাঁড়ি থাকতে হবে। ইউরোপ ও ব্রিটেনের মধ্যে আছে সমুদ্র ইংলিশ চ্যানেল এবং নর্থ সি। কিন্তু আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড মধ্যে আছে স্থল সীমান্ত। তাই ব্রেক্সিটের পর এটিই পরিণত হবে ইউরোপ আর ব্রিটেনের স্থল সীমান্তে। ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেই এ সীমান্তে কাস্টমস চৌকি বসাতে হবে। কিন্তু অন্যদিকে এই দুই আয়ারল্যান্ডের মানুষের ভাষা এক, সংস্কৃতি এক, অনেক পরিবারেরই দুই শাখা দুদিকে বাস করে। আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, উত্তর আয়ারল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সহিংস বিদ্রোহের অবসানের জন্য হওয়া গুড ফ্রাইডে চুক্তিতেও আয়ারল্যান্ডের দুই অংশের যোগাযোগ যেভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে- তাও এতে বিপন্ন হতে পারে। এই কারণে তেরেসা মে ব্যাকস্টপ প্রস্তাব দেন। এতে বলা হয়, দুই আয়ারল্যান্ডের মধ্যে কোনো ‘হার্ড বর্ডার’ বা বাস্তব সীমান্ত থাকবে না। মানুষ ও পণ্যের অবাধ চলাচল যথাসম্ভব আগের মতোই থাকবে। অন্যদিকে ব্রেক্সিট সমর্থকদের একাংশ বলছেন, মিসেস মে-র চুক্তিতে যে ব্যাকস্টপ পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তাতে উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ব্রিটেনের বাকি অংশ এ দুয়ের জন্য দুই নিয়ম চালু হবে। তাদের মতে, এক দেশে দুই নিয়ম থাকতে পারে না এবং এর ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ড কার্যত যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, ব্রিটেন আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে কখনই ইইউ থেকে বেরোতে পারবে না।
সাবেক ব্রেক্সিট মন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক দেশ এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ (ব্যাকস্টপ) মেনে নেবে না। তাই নতুন প্রধানমন্ত্রীকে ওই বিষয়গুলো গভীরভাবে আমলে নিতে হবে। এ ছাড়া ব্রেক্সিটের জন্য যুক্তরাজ্যকে ৩৯ বিলিয়ন ডলার ইইউকে দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির গুরুতর ক্ষতি হবে। ব্রিটেনের সোয়ানসি ইউনিভার্সিটির শিক্ষক রোযেন আযাদ চৌধুরী বিবিসিকে বলেন ‘বাজারে প্রচণ্ড অনিশ্চয়তা দেখা দেবে, যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ গত এক বছরে অনেক কমে গেছে। অনিশ্চয়তা যদি আরও বিরাজ করে অর্থনীতির জন্য সেটি খুবই খারাপ অবস্থা হবে।’ এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে মিস্টার চৌধুরী বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো চুক্তি নিয়ে যদি না বের হয়, তাহলে যুক্তরাজ্যের জিডিপি ৮ শতাংশে নেমে যাবে। ২০১৮ নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের সরকার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন মতে, ব্রেক্সিট কার্যকরের পর নতুন কাঠামোর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে ভালো ঝামেলা পোহাতে হবে। ওই প্রতিবেদন মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ব্রিটেনের অর্থনীতি মোট ৪ শতাংশ সংকীর্ণ হবে। ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতা করা গেলে এ ক্ষতি অনেকাংশ এড়ানো যাবে। আর যদি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর হয় তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বাড়বে, অর্থনীতি সংকীর্ণ হবে ১৫ বছরে ৭.৭ শতাংশ। আরেকটি বড় প্রশ্ন, প্রায় ৩০ লাখ ইইউ নাগরিক যুক্তরাজ্যে বাস করেন। অপরদিকে ১১ লাখ ব্রিটিশ নাগরিক ইইউর অধিবাসী রয়েছেন তাদের কী হবে? এশিয়া বা আফ্রিকায় থেকে যাওয়া অভিবাসীদের কী হবে? দেখার বিষয় ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী এসব প্রশ্নের কী উত্তর দেন।
মেহেদী হাসান : শিক্ষক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়