স্পেনের গণমাধ্যমজুড়ে নুসরাত হত্যাকাণ্ড
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩১:১৬,অপরাহ্ন ২২ এপ্রিল ২০১৯ | সংবাদটি ৪৭৩ বার পঠিত
কবির আল মাহমুদ, স্পেন :
বাংলাদেশে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের হত্যাকাণ্ড- গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে স্পেনের সংবাদ মাধ্যম। স্পেনের জাতীয় দৈনিক ‘লা ভানগুয়ারদিয়া’ ও জনপ্রিয় টেলিভিশন ‘লা সেক্সতা’ সহ বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের হত্যাকা-ের খবর।
স্পেনের প্রভাবশালী জাতীয় দৈনিক ‘লা ভানগুয়ারদিয়া’ গত ১৮ এপ্রিল আন্তর্জাতিক সংবাদ বিভাগে শিরোনাম করে ‘যৌন হয়রানির রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশে এক যুবতীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা’। সংবাদটির শুরুটা ছিলো এভাবে- তার নাম নুসরাত জাহান রাফি। ওরা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তিনি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ১৯ বছর বয়সী এ তরুণীর মৃত্যু সাথে সাথে হয়নি। পাঁচদিন পর তার হৃদযন্ত্র পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পত্রিকাটিতে নুসরাত হত্যায় জড়িত সন্দেহে মাদ্রাসার পরিচালককে গ্রেফতারের কথাও উল্লেখ করা হয়। নুসরাত হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র এর ব্যানারে ‘নুসরাতের জন্য পদযাত্রা’ এর ছবি সংবাদে সংযুক্ত করা হয়।
‘সেক্সতা’ টেলিভিশন সংবাদে নুসরাত হত্যার খবর গুরুত্বসহকারে প্রচার করে। ১৯ এপ্রিল প্রচারিত সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়- নুসরাতের মৃত্যু পুরো বাংলাদেশকে হতাশ করেছে। কর্তৃপক্ষ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে, যাদের মধ্যে সাতজনই হত্যার অভিযোগের সাথে জড়িত। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জেল হাজতে রয়েছেন। নুসরাতের করা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নথিভুক্ত যে পুলিশ কর্মকর্তা করেছিলেন, তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
‘এল পুবলিকো’ এর শিরোনাম ছিলো- ‘যৌন নির্যাতন: বাংলাদেশে এক তরুণীকে জীবন্ত পুড়ানো হয়’। গত ১৮ এপ্রিল প্রকাশিত এ সংবাদের বিস্তারিত অংশে ছিলো- নুসরাত জাহান রাফী বাংলাদেশে যৌন নির্যাতনের সর্বশেষ শিকার। ১৯ বছর বয়সী মেয়েটি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের মাত্র ২ সপ্তাহ পরে তাকে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জীবন্ত পুড়ানো হয়। ৫দিন পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ‘লা সেক্সতা’ টেলিভিশনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি আরো জানায়, মৃত্যুর আগে শেষ বিবৃতিতে নুসরাত জানায়, ‘অধ্যক্ষ আমাকে স্পর্শ করেছিলেন; আমার শেষ নি:শ্বাস থাকা পর্যন্ত আমি এ অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করবো।’ সংবাদের শেষাংশে উল্লেখ করা হয়, এশিয়ার দেশগুলোতে রক্ষণশীল সমাজ কর্তৃক প্রত্যাখানের ভয়ে অধিকাংশ যৌন হয়রানির সংবাদ প্রকাশিত হয় না।
‘এল কমর্সিও’, ‘এল উসিভার্সাল’, ‘টেলিমুণ্ডো’, ‘উল্তিমা অরা’সহ স্পেনের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমও নুসরাত হত্যার খবর প্রচার করে।