কানাডায় বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৫৫:৫০,অপরাহ্ন ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ৬৪০ বার পঠিত
তৃতীয় বাঙলা ডেস্কঃ
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থার পরিচয় দিয়ে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের তৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলেন, কানাডার সরকারি কোনো সংস্থা টেলিফোনে ব্যক্তিগত তথ্য চায় না বা অর্থ পরিশোধ করতে বলে না। তারা সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুন দেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টরন্টো থেকে সম্প্রচারিত ‘শওগাত আলী সাগর লাইভ’ অনুষ্ঠানে এ মতামত দেন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে প্রচারিত এ অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম, সাইবার ফ্রড এবং ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন বিশেষজ্ঞ খালেদ শোয়েব, আইনজীবী ব্যারিস্টার জয়ন্ত সিনহা এবং সাংবাদিক কিশোয়ার লায়লা।
নতুন দেশের প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর জানান, ইমিগ্রেশন, সার্ভিস কানাডা, রেভিনিউ কানাডা এমনকি আরসিএমপির নাম ভাঙিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে টেলিফোনে নাগরিকদের প্রতারিত করছে। বাংলাদেশি কমিউনিটিকে এ প্রতারণা সম্পর্কে সচেতন করে দিতে এ আলোচনার আয়োজন করা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম, সাইবার ফ্রড এবং ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন বিশেষজ্ঞ খালেদ শোয়েব বলেন, সারা বিশ্বে ১০ হাজারের বেশি কল সেন্টার থেকে টেলিফোনকলের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। ইন্টারপোল এ ব্যাপারে সক্রিয় আছে। তবে নাগরিকদেরও সতর্ক হতে হবে।
তিনি বলেন, কানাডাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর থার্ড পার্টি আউটসোর্সিংয়ের সুযোগে এসব দেশের নাগরিকদের নাম টেলিফোন নম্বর বেহাত হয়ে গিয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এ প্রতারণার নেটওয়ার্ক বিশ্বজুড়ে এবং তারা নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই নাগরিকদের প্রতারণা করছে। আগামী ১০ বছর পর আরও উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা প্রতারণা করবে। সে জন্য প্রস্তুতির দরকার আছে।
খালেদ শোয়েব বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকারি কোনো সংস্থা ফোন করলেই আতঙ্কিত না হয়ে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ করুন, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রয়োজনে কল ব্যাক নম্বর রেখে তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে খোঁজখবর করুন। তিনি বলেন, প্রতারকরা আপনাকে বিভ্রান্ত করতে গভীর আস্থার সঙ্গে কথা বলবে, কিন্তু তাতে বিভ্রান্ত হলে চলবে না।
ব্যারিস্টার জয়ন্ত সিনহা তার আলোচনায় সরকারি বিভিন্ন সংস্থা কীভাবে নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা কীভাবে জানায় তার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, টেলিফোনের মাধ্যমে কোনো আদালত বা আরসিএমপি গ্রেফতারি পরোয়ানার তথ্য নাগরিকদের জানায় না, সরকারি কোনো সংস্থা ক্রেডিট কার্ড, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন বা গিফট কার্ডের মাধ্যমে নাগরিকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে না।
সাংবাদিক কিশোয়ার লায়লা তার আলোচনায় নাগরিকদের বিশেষ করে নতুন আসা অভিবাসীদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, সরকারি অর্থায়নে বিভিন্ন সেটেলমেন্ট সংস্থা নতুন অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে। তারা প্রতারণার ধরন ও করণীয় সম্পর্কে নতুন অভিবাসীদের তথ্য দিয়ে সচেতন করে তুলতে পারে। তা ছাড়া বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠন এবং ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপও কার্যকর সচেতনতামূলক ভূমিকা রাখতে পারে।