রহস্যময় স্বৈরশাসক কিম, হত্যা করেছিলেন নিজের প্রেমিকাকেও!
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১৮:৫২,অপরাহ্ন ০৫ মে ২০২০ | সংবাদটি ৭২২ বার পঠিত
তৃতীয় বাঙলা ডেস্কঃ
বিশ্বজুড়ে এক রহস্যের নাম উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম জং উন। সবশেষ আলোচনায় এসেছেন প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে জনসম্মুখে না এসে। হার্ট অ্যাটাক অথবা করোনায় মারা গেছেন এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। অবশেষে ১ মে জনসমক্ষে হাজির হয়েছেন তিনি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, শুক্রবার কিম একটি রাসায়নিক সার উৎপাদনের কারখানা উদ্বোধন করেছেন। গুজবের কেন্দ্রে আসা উত্তর কোরিয়ার এ নেতা আসলে অসুস্থ ছিলেন না। এমনকি তার কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারও হয়নি।
২০১১ সালে কিম জং উন তার বাবা এবং উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন স্বৈরশাসক কিম জং ইলের মৃত্যুর পরে স্বৈরশাসক হিসাবেই দেশের শাসনভার হাতে নেন। নিজের বাবা এবং দাদার মতোই, কিম জং উনেরও দেশের জনজীবন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট জ্ঞান নেই, তবে শোনা যায় তিনি নাকি সাত-আট বছর ধরে সুইজারল্যান্ডে পড়াশোনা করেছেন।
নিজের পরিচয় গোপন করে উত্তর কোরিয়া দূতাবাসের এক কর্মীর চালকের ছেলে পরিচয়েই সেখানে পড়াশোনা করেন কিম। এরপরে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং মিলিটারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন।
দেশের শাসন ক্ষমতা গ্রহণের পরে, কিম জং তার সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার করতে শুরু করেন। তাকে একসময় গোটা বিশ্বের কাছে গ্রেট সাকসেসর এবং আউটস্ট্যান্ডিং লিডার হিসাবেই পরিচয় দেওয়া শুরু হয়। কোরিয়ান এজেন্সিগুলি তাকে এমন এক মহান ব্যক্তি হিসাবে সকলের সামনে ভাবমূর্তি গড়ে দিতে চায় যেন তিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন।
উত্তর কোরিয়া সবসময়েই তার পারমাণবিক পরীক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কেও কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এবং আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় সবসময়ই তাই এ দেশটির বিরোধিতা করে এসেছে। কিম জং উনও তার বাবার মতো এ বিষয়গুলো নিয়েই একগুঁয়েমি নীতি অনুসরণ করে চলেন।
কিম জং উনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করার মতোও অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকবার। এমনকী এ অভিযোগও ওঠে যে নিজের দেশেই তার বাবার আমলে কাজ করেছেন এমন তিন মন্ত্রী এবং ৭ জন জেনারেলকে পদ থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয় বলেও খবর রটে।
সবসময় ক্ষমতার অহঙ্কার করেন কিম জং উন। এমনকী এ ক্ষমতার অহংকারেই তিনি নাকি তার এক ঘনিষ্ঠ শক্তিমান নেতা এবং বান্ধবীকেও হত্যা করতে পিছুপা হননি, এমন অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
কিম জং উনকে নিয়ে যখনই কোনও বিতর্ক দানা বাধে, তখনই তিনি কীভাবে যেন উধাও হয়ে যান। এর আগেও দেখা গেছে, ২০১৪ সালের প্রথম দিকে তিনি টানা ৪০ দিন গায়েব ছিলেন। এবারেও, ২০ দিন লোকচক্ষুর আড়ালে থাকার পরে হঠাৎ করেই আবার ফিরে এলেন তিনি। অথচ পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে কিম জং উন মারা গেছেন এ খবরটা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সেই পরিস্থিতি থেকে হঠাৎ আবার উদয় তার।
গত ১৫ এপ্রিল কিম জং উন নিজের দাদার জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও অংশ নেননি। তারপরেই তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে নানা খবর প্রকাশিত হতে থাকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। এমনকী, কেউ কেউ তো তিনি মারা গেছেন বলেও রিপোর্ট প্রকাশ করে ফেলে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল বহাল তবিয়তেই আছেন কিম। তবে তিনি মাঝেমাঝেই কোথায় উধাও হয়ে যান আর কেনই বা যান, তা কিন্তু এখন পুরো বিশ্বের কাছেই একটা বড় রহস্য।
সূত্র: এনডিটিভি, ওয়াশিংটন পোস্ট।