সিলেটে ‘পাসপোর্ট অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য’
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০৪:১৫,অপরাহ্ন ১৮ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৩৬২ বার পঠিত
সাত্তার আজাদ :
মো. গিয়াস উদ্দিন। পেশায় এডভোকেট। সিলেট কোর্টে আছেন। তিনি অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে চান। কিন্তু পাসপোর্টের মেয়াদ নাই। তাই দেড়মাস আগে নবায়নের জন্য পাসপোর্ট জমা দেন সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে। গতকাল পর্যন্ত তিনি পাসপোর্ট হাতে ফেরত পাননি। তিনি জানান, লোকে বলে হয়রানি আর যত ঝামেলা কোর্ট ঘিরে। কিন্তু এখন দেখি পাসপোর্ট অফিসেই হয়রানি সবচে বেশি।
এমন কথা শুধু একজন আইনজীবীরই নয়, সিলেটের পাসপোর্ট সেবা গ্রহণকারী সকল নাগরিকের। যেন দুর্নীতির জালে বন্দি হয়ে পড়েছে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস। দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে হয়রানি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা পাসপোর্ট সেবা গ্রহণকারীরা নানা সমস্যায় পড়েন।
সিলেট নগরীর আলমপুর এলাকায় পাসপোর্ট অফিস। পাসপোর্ট অফিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অফিস ও অফিসের বাইরে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। দালালরা অসাধু অফিসার ও কর্মচারীদের ম্যানেজ করে দাপটের সাথে তাদের দালালী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের ১৭ জন স্টাফের মধ্যে অধিকাংশই দুর্নীতির সাথে জড়িত। কাঁচা টাকার স্বাদ যেন ছাড়তে চাননা কেউই। সিলেটের বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে দালালদের সহযোগিতা করছেন আনছার সদস্য, অফিস সহায়ক, রেকর্ড কিপার, ডেসপার ড্রাইভার, দপ্তরী, নৈশ প্রহরী, পরিচ্ছন্ন কর্মী। বাহিরে পাসপোর্ট অফিসের সামনের কয়েকটি দোকানের মালিক এবং বহিরাগত দালালরা। দালালদের আরেক আড্ডার স্থল আলমপুর ওয়ান ব্যাংকের বুথ এবং পাসপোর্ট অফিসে ঢোকার মুখে হোটেল ও ফটোকপির দোকান। বহিরাগত অনেক দালাল পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকরা ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে সেবা না পেলেও দালালরা অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে জটিল কাজও সেরে নেন।
সিলেট ও সিলেটের বাইরের দুই শতাধিক ট্রেভেলসের সাথে পাসপোর্ট অফিসের অবৈধ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসূত্র আছে। তাই ঝামেলা এড়াতে গ্রাহকরা ট্রেভেলসে পাসপোর্ট অফিসের ঘুষের টাকা পরিশোধ করে নেন। আর এ কারণে দালালের মুখ্যভূমিকায় এসব ট্রেভেলস এজেন্সি রয়েছে।
ট্রেভেলস এজেন্সি পাসপোর্ট অফিসের এডি’র সাথে যোগসূত্রেরর বরাতে কমিশন বাণিজ্যের নামে দালালী টাকা আদায় করে।
পাসপোর্ট অফিসকে ঘিরে আছে প্রায় অর্ধ শতাধিক দালাল সদস্য। এরমধ্যে এলাকার জোরে প্রভাব খাটিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ডের রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দালালী ফায়দা নিচ্ছেন।