এমপি জাহিদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৫৪:৪৪,অপরাহ্ন ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | সংবাদটি ৪১৯ বার পঠিত
তৃতীয় বাঙলা ডেস্ক :
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ জাহিদুর রহমান জাহিদকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান।
ফখরুল বলেন, “আমাদের দলের সিদ্ধান্ত ছিল, সংসদে শপথ গ্রহণ না করার। দলের এই সিদ্ধান্তকে অমান্য করে পাশ কাটিয়ে শপথ নেওয়ায় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান জাহিদকে প্রাথমিক সদস্যসহ বিএনপিকে থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজকের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে মির্জা ফখরুল ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবু্র রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।স্কাইপের মাধ্যমে লন্ডন থেকে বৈঠকে যুক্ত হয়েছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপির প্রথম সাংসদ হিসেবে বৃহস্পতিবার শপথ নেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান জাহিদ।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ এর আগে তিনবার নির্বাচন করে একবারও জয়ী হতে পারেননি। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির মধ্যেও ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন তিনি।
বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটের ওই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেও তা উপেক্ষা করে গণফোরামের সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খানের পর শপথ নেন বিএনপির জাহিদ।
শপথ নিলে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে জেনেই তিনি সংসদে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন এই বিএনপি নেতা।
বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বিষয়ে দল যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেটা জেনেশুনেই শপথ গ্রহণ করেছি। দল যদি মনে করে বহিষ্কার করবে- করতেই পরে। বহিষ্কার করলেও কিন্তু আমি দলে আছি।
“আমি এই দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। সেই ছাত্র জীবন থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর এই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কাজেই বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি তো বিএনপি থেকে বহিষ্কার হব না। আমি আছি।”
সংসদে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি তুলবেন বলেও জানান তিনি।
নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথা রাখার জন্যই শপথ নিয়েছেন দাবি করে জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, “যেহেতু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি, এলাকার মানুষের প্রচণ্ড চাপ। ঢাকায় এই পনের দিন ধরে আছি, এলাকার মানুষের একটাই বক্তব্য- ‘শপথ নিয়ে ফিরে আসেন’।”
একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাহিদ ছাড়াও বিএনপির আরও পাঁচজন নেতা নির্বাচিত হন। তারা হলেন- বগুড়া-৬ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে হারুনুর রশীদ, বগুড়া-৪ আসনে মোশাররফ হোসেন ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনে উকিল আবদুস সাত্তার।
আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শপথ না নিলেও তাদের আসনে নতুন করে নির্বাচন হবে। মির্জা ফখরুল ছাড়া বাকিরা এরমধ্যে শপথ নিতে পারেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।