‘অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গিতে গণবিরোধী চরিত্র আছে’
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩৪:২৯,অপরাহ্ন ২৫ জুন ২০১৮ | সংবাদটি ১৮০ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, অর্থমন্ত্রী ১০ বার বাজেট দিয়েছেন। ৮ বার গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে আর ২ বার সামরিক সরকারের আমলে। তিনি সামরিক সরকারকে যেমন মনে করেন, তেমনি নির্বাচিত সরকারকেও ঠিক সেই রকম মনে করেন।
ওনার দৃষ্টিভঙ্গিতে একটা গণবিরোধী চরিত্র আছে, সেই গণবিরোধী চরিত্রের বর্হিপ্রকাশ ঘটে বিড়ি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। এই অর্থমন্ত্রী, তিনি এক সময় বিশ্ব ব্যাংকে চাকরি করতেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবেন- এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানির স্বার্থে বিড়ি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এবং বিড়ি শিল্পের বিরুদ্ধে তিনি (অর্থমন্ত্রী) গত দশ বছর যাবৎ যে চক্রান্তমূলক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন, এটা আমরা সফল হতে দেব না। আমরা এটা ব্যর্থ করে দেব।
আমি ইতোমধ্যে পার্লামেন্টে কথা বলেছি। বিড়ি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। আমাদের অর্থমন্ত্রী, তিনি বিশাল বাজেট দিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখে বাদশা বলেন, প্রতি বছর ৩০ লাখ শ্রমিক শ্রম বাজারে যুক্ত হয়। প্রতি বছর মানুষের কর্মসংস্থানের দাবি বাড়ে। আমার প্রশ্ন, আপনি বিশাল বাজেট করে কৃতিত্ব নিতে চান। কিন্তু আমরা কৃতিত্ব দিতে চাই না। কারণ আপনাকে বলতে হবে এই বিশাল বাজেটের মধ্য দিয়ে আপনি আমাদের কত মানুষের কর্মসংস্থান করছেন?
এক লাখ বিড়ি শ্রমিকের কর্মসংস্থান দিন, তারপরে কথা বলেন। তা তো দিচ্ছেন না আপনি। ‘আপনি কর্মসংস্থান সম্পর্কে কোনো কথা বলেন না।’
তিনি বলেন, আপনি যত বড় বাজেটই দেন না কেন? সে বাজেটে বাংলাদেশের মানুষের কোনো লাভ হবে না। আপনি নিজেই একদিন এই পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমরা যে পরিমাণ বাজেট দেই সেই পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। কারা পাচার করে? কেন করে? কে তারা? তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেন না? কিসের জন্য? আজকে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি হলে তদন্ত হয়, সে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয় না কেন? তাহলে আজকে যে ব্যাংক লুটপাট হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আপনি কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেটাও আমরা দেখতে পাই না।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনি বিশাল বাজেট দেবেন আর আমাদের বেকারত্ব বাড়তে থাকবে। বিড়ি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের বিকল্প ব্যবস্থা করবেন না। অথচ বিড়ি শিল্পকে ধ্বংস করে দিতে আপনি চক্রান্তে লিপ্ত থাকবেন। এই বাজেটকে আমি কখনো বলতে পারি না এটা একটা গণমুখী বাজেট।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বিড়ি শ্রমিকরা সমাজে অবহেলার পাত্র নয়। বিড়ি শিল্প বাঙালির পুঁজির বুনিয়াদ। এই বিড়ি শ্রমিক ভাইয়েরা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে, স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানি আমাদের শিল্পকে রাঘব-বোয়ালের মতো গ্রাস করে নিচ্ছে। তাই আমি বলবো দেশীয় বিড়ি শিল্প ও এই শিল্প থেকে যে সিগারেট শিল্প হয়েছে তাকে কুটির শিল্পের স্বীকৃতি দিতে হবে।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান, অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম কে বাঙালি, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান প্রমুখ।